দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের ঘোষণা দিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে এই সৌজন্য বিনিময় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম।
গত কয়েক দিনে একের পর এক পদত্যাগের খবরের মধ্যে এই সৌজন্য বিনিময় অনুষ্ঠান থেকে বর্তমান কমিশনের সরে যাওয়ার ঘোষণা আসবে বলে জানা গেছে।
সিইসির একান্ত সচিব মো. রিয়াজ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ বিনিময় অনুষ্ঠানে পুরো কমিশন উপস্থিত থাকবে। কী হতে যাচ্ছে তা স্যার তুলে ধরবেন।’ তবে তারা পদত্যাগ করবেন কিনা এমন কিছু তিনি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেননি।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার তিনদিন পর গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে কার্যালয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন নির্বাচন কমিশনাররা। গত এক মাসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা খুব বেশি অফিসে উপস্থিত থাকেননি। অবশ্য এর মধ্যে দুদিন ইসি জরুরি সভা করে তিনটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। সেখানেই তাদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে। সে সময়ে গণমাধ্যমের সামনে পদত্যাগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে সরে যাওয়ার ব্যাপারে সবাই একমত হন।
এ নিয়ে বুধবার বিকেলে নির্বাচন ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রশ্ন করা হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাল জানাব। দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে সবকিছু জানানো হবে।’
সরকার পরিবর্তনের পর থেকে একের পর এক পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া আইন অঙ্গনের অনেকে পদত্যাগ করেছেন। পুলিশ, প্রশাসনসহ সবখানেই ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। সবশেষ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও পদত্যাগ করেছেন।
পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে বার বার আলোচনায় এসেছে নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগ। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে।
জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছিল কমিশন। রাষ্ট্রপতি প্রথমে সাক্ষাতের সময় দিলেও পরে তা বাতিল করা হয় বলে জানা গেছে।